নিজস্ব প্রতিনিধি :
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসা আওয়ামীলীগের জয়বাংলা লীগ নেতা কায়সার ই আলম প্রধানের নানা বিষয় এখন সারাদেশ জুড়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে টাকার লোভ,ক্ষমতার দ্বম্ভ আর জুয়ার নেশায় বিভোর কায়সার নারী লোভীও।
বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক মেয়ের ছবির নিচে তিনি লেখেন-“এই ছেরিরে পাইলে মজা পাইতাম। এক রাইতের জন্য হেইরে হাওলাত দিবেন?”
আর তার এ কমেন্ট খোদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হওয়ায় তা নিয়ে অবাক নেটিজেনরা। নিজের মেয়ের বয়সী মেয়েকে নিয়ে এমন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় তার শাস্তির দাবি উঠেছে নেট দুনিয়ায়। জাতীয় গগণমাধ্যম কালেরকন্ঠের এক প্রতিবেদন সূর্ত্রে জানা যায়-
কায়সার ই আলম প্রধান ভূয়া দলিল দেখিয়ে জমি বিক্রির কথা বলে টাকা নিয়ে জমি অথবা টাকা কিছুই বুঝিয়ে দিচ্ছেন না পাওনাদারকে।
বহুবিচিত্র চরিত্র তার । জুপিটার পাবলিকেশন্স এর মালিক কায়সার ই আলম প্রধানের বাড়ী নরসিংদীর বেলাব উপজেলায়। এখান থেকে হতে চেয়েছিলেন আওয়ামীলীগের এমপি। এলাকায় শোডাউন, পোস্টার, গুন্ডাবাহিনী সবই তৈরি করেছিলেন ; দলকে খুশি করতে নিজের প্রভাব দেখাতে হয়েছিলেন আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গানো তথাকথিত জয়বাংলা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার।
রাজনীতি আর সমাজসেবার নামের আড়ালে তার পরিচয় হয়ে উঠেছিল জমি জালিয়াতির মাফিয়া। গ্রামের বাড়ী বেলাব উপজেলায় একাধিক ব্যক্তির কাছে জমি বিক্রি করবে বলে টাকা নিয়ে জমি না দিয়ে টাকাও ফেরত দেননি। অস্ত্র ঘষে মুছে তাদের সামনে ভয় দেখিয়ে, নিজের নানা সময়ের ঘটনা বলে সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে রাখাই যেন তার কাজ। সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ এর সাথে থাকা একাধিক ছবিকে পুঁজি করে বেনজির ঘনিষ্ঠ বলে সবাইকে চুপ করিয়ে রেখে পরের টাকায় পোদ্দারি ভালোই করেছেন। এতদিন ভয়ে কেউ মুখ খুলেনি। সম্প্রতি গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড হয় তার এক পাওনাদারের সামনে বলা তার কথা। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায় “দুই হাজার সাল থেকে দুই হাজার চোদ্দ /ষোল পর্যন্ত আমার পরনেই দুই কোটি টাকা থাকতো। আমার এই হাত ঘড়িটার দাম ২২ লাখ টাকা, আমার মোবাইল ফোনটার দাম ৫ লাখ টাকা। এটা গোল্ডের। শার্টের দাম থাকতো ২ লাখ, প্যান্টের দাম থাকতো ৮০ হাজার।
এভাবে প্রত্যেকটা দামী জিনিস “।
এক জমির ৩-৪ জনের কাছে বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সীমা নেই, অভিযোগ উঠেছে গেলো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন করতে ছাত্রলীগ যুবলীগকে অর্থ সহযোগিতা করেছিলেন কায়সার ই আলম প্রধান। তার কথোপকথনের ভিডিওতে দেখা যায় তিনি দম্ভসহ বলেছেন-” জুয়া খেলাত গিয়া আমি ৭০ কোটি টাকা হারছি। এরপরও আমার কাছে ৭০ কোটি টাকা আছে “।
সে নিজের মুখেই বলে জাল দলিল আর বৈধ দলিল বহু সম্পদ তার নামে আছে, জাল দলিল দিয়ে জমি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। জুপিটার পাবলিকেশনের মালিক হলেও এই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর ধরে অচল অবস্থায় থাকলেও তিনি তার সাথে বহন করেন ইজরায়েলের তৈরি ওজি মেশিন গান, ওয়েল্থার পিপিকে এস এর মত দামি দামি কোম্পানির অস্ত্র। বর্তমান সময়ে অস্ত্র জমা দেওয়ার তারিখ চলে গেলেও তার কাছে
অস্ত্র থাকে কি করে? তিনি কি অস্ত্র জমা দেননি? নাকি যেটা আছে সেটা অবৈধ অস্ত্র? এমন প্রশ্ন উঠলেও ভয়ে অনেকেই মুখ খুলেননা!
টাকার জোরে সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলার কৌশলও নাকি তার জানা। “সরকারে যে দলই থাকুক সে সরকারকে আমি টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নেব” এমন কথাও তাকে বলতে শোনা যায়।
” এখন মানুষ আমার কাছে ৬০ কোটি টাকা পায়। ব্যাংক ২৫ কোটি আর বাকি ৩৫ কোটি পাবলিক পায়। এর মধ্যে আল্লাহর রহমতে কেউ এসে এই টেবিলে হাত দিয়ে টাকা চায়তে পারেনি। কারন তারা জানে টাকা চাইলে হাত এখানেই রেখে দেবো। আমার যখন টাকা হয় আমি নিজে টাকা দিয়ে দেই “।
সে নিজেই বলে বেড়াতো
আওয়ামী লীগ আমলে এমপি, স্থানীয় চেয়ারম্যানরা ছিল তার পকেটে। আর এসব ভয় ভীতির কারনে তার কাছে জায়গা কেনার টাকা দিয়ে অসহায় হয়ে পরেছিল ভুক্তভোগীরা। একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছে সেনাবাহিনী এবং দুদকের সদর দপ্তরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এসব অভিযোগে আওয়ামীলীগ নেতা কায়সার ই আলম প্রধানের কাছে জানতে চাইলে তার মোবাইল ফোনে বারবার কল করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে সমালোচনা হলে কায়সার ই আলম তার ফেইসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেন যে তার আইডি হেক হয়েছেএবং তিনি এসব মন্তব্য করেননি কিন্তু তার এসব বাজে ও নোংরা মন্তব্যের প্রতিবাদে নেটিজিনরা প্রতিবাদ শুরু করলে তিনি কৌশলে তার ফেইসবুক আইডি সাথে সাথে ডিএকটিভেট করে দেন।
এ বিষয়ে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো: আবদুল হান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-” এ বিষয়ে আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। কোন অভিযোগ আসলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নিবো।”